২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

রেলওয়ে কর্মকর্তা শহীদুলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:

রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেণ্ট (সিওপিএস) শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পর্দার আড়ালে থেকে পরষ্পর যোগসাজসের মাধ্যমে নিজ দফতরের অধ্বস্তন কর্মচারীর নানা অপকর্মেও সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতি লালন করা এই কর্মকর্তা চাকরি বাণিজ্যসহ নানা উপায়ে নামে বেনামে করেছেন বিপুল অর্থ ও সম্পদ।

রেলওয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের টিএলআর পদে এ পর্যন্ত শতাধিক অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে নূন্যতম চার লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেওয়া হয়। অস্থায়ীভাবে এই জনবল নিয়োগ হলেও পরবর্তীতে তাদের স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

সূত্রটি আরো জানায়, যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে মন্ত্রী, এমপিদের মৌখিক সুপারিশে অন্তত ২৫ জন, সিওপিএসের নিজস্ব ২০ জন, পিয়ন রবি রাজভর ছেলেসহ রেল সংশ্লিষ্টদের আরো ১০জন নিয়োগ পেয়েছেন। আর বাকিরা অন্যান্য তদবিরে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নিয়োগের মাধ্যমে গড়ে অন্তত পাঁচ কোটি টাকা কামিয়েছেন রেলওয়ের এই কর্মকর্তা।

সূত্র জানায়, নগরীর ছোটবনগ্রাম এলাকায় একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন শহীদুল ইসলাম। সাড়ে ১৩ কাঠার নিজ জমির ওপর ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ভবনের তিনটি ফ্লাট শহীদুল ইসলামের নামে। আর বাকিগুলো বিক্রির জন্য রেখেছেন। যদিও শহীদুল ইসলাম দাবি করেছেন একটি ফ্লাট নিজের নামে রেখেছেন। এছাড়া নামে বেনামে রাজশাহী, ঢাকা, বরিশালে সম্পদ গড়েছেন।

রেলওয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, রেল কর্মকর্ত শহীদুলের ভাই রুহুল আমিন দুলাল পিরোজপুর-৩ আসন থেকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। ভাই বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় বিভিন্ন সময়ে তিনি আর্থিকভাবে তাকে সহযোগিতা করার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন নামে একাধিক ট্রেন লীজ নিয়ে পরিচালনা করার অভিযোগ রয়েছে শহীদুলের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি কর্মককর্তা হয়েও তিনি কিভাবে বাণিজ্যিকভাবে এই ব্যবসা পরিচালনা করেন। ইতোপূর্বে অতিঃ সিসিএম পদে কর্মরত থাকাবস্থায় বিভিন্ন অভিযোগ তাকে চট্রগামে বদলি করা হয়।

পরে দুই মাসের মাথায় তদবির করে আবার তিনি অতিঃ সিসিএম পদে যোগ দেন। এরপর প্রমোশন পেয়ে তিনি সিওপিএস হন। বর্তমানে এ পদেই তিনি বহাল রয়েছেন।

তিনি একাধিক নিয়োগ কমিটির আহবায়ক ও সদস্য থাকার সুবাদে নিয়োগ বাণ্যিজ্যের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেণ্ট (সিওপিএস) শহীদুল ইসলাম জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের টিএলআর পদে এ পর্যন্ত শতাধিক অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তবে মামলা হলে তারা স্থায়ী নিয়োগ পাবেন বলে জানান তিনি। এছাড়া টাকার বিনিময়ে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে আমি কখনো জড়িত ছিলাম না।

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ