২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে সর্বাধুনিক বগি যুক্ত হলো নীলসাগরে : ক্ষোভে রাজশাহীর মানুষ

জামি রহমান, নিজস্ব প্রতিনিধি: আট মাস পরে রাজশাহী-ঢাকা রুটের একমাত্র বিরতিহীন আন্তঃনগর ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ অত্যাধুনিক বগিগুলো বনলতা থেকে সরিয়ে ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রাজশাহীর মানুষ।
গত আট মাস আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক বগি দিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এগুলোই বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে সর্বাধুনিক বগি।
একেবারেই নতুন এই বগিগুলোতে সংযুক্ত রয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট। এ কারণে মলমূত্র রেললাইনের ওপরে পড়ে না। রয়েছে রিক্লেনার চেয়ার। আছে ওয়াই-ফাই সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে এলইডি ডিসপ্লে। যার মাধ্যমে স্টেশন ও ভ্রমণের তথ্য প্রদর্শন করা হয়। মোট ১২টি বগি দিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস উদ্বোধন করা হয়।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ঢাকা-রাজশাহী রুটে বিরতিহীন ট্রেন চালুর জন্য সংসদে একাধিকবার দাবি জানিয়েছিলেন। তারপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেনটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু বনলতার অঙ্গহানির কারণে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই বনলতার বগি সরিয়ে নেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজশাহীর মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।পরে গত ২২ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, রেলমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। বনলতা ট্রেনের বগি পরিবর্তন করা হবে না। তারপরেও গত শুক্রবার বনলতার বগি পাঠানো হয়েছে নীলসাগরে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে শেষবারের মতো ইন্দোনেশিয়ান র‌্যাক (ট্রেনের সব কোচ মিলে একটি র‌্যাক) নিয়ে যাত্রা করেছে বনলতা। এরপর ট্রেনটির সাপ্তাহিক বন্ধের দিন গত শুক্রবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার র‌্যাকটি চলে গেছে পার্বতীপুরে। শুক্রবার রাতের মধ্যে নীলসাগর এক্সপ্রেসের ভারতীয় এলএইচবি র‌্যাকটি বনলতার জন্য রাজশাহীতে আসার কথা রয়েছে। গতকাল শনিবার পুরনো বগি নিয়ে যাত্রা শুরু করবে বনলতা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, বনলতার ইন্দোনেশিয়ার বগিগুলো দিয়ে ট্রেনের শিডিউল ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই পরিবর্তন করতে হলো। তাছাড়া এই র‌্যাকে কোনো কেবিন ছিলো না। ভারতীয় র‌্যাকটিতে থাকছে দুটি এসি চেয়ার কোচ এবং দুটি এসি কেবিন। আসনও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে রাজশাহীবাসী আরও ভালো পরিষেবা পাবেন বলেও দাবি তার।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ এপ্রিল রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচল শুরু করে বনলতা এক্সপ্রেস। গত ১৭ জুলাই থেকে ট্রেনটির চলাচল চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বনলতা আপ-৭৯১ ট্রেনটি ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছায়। আর বেলা ১টা ৩০ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌঁছে। গোলোযোগ না থাকলে ৩৪৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমে ট্রেনটির সময় লাগে ৪ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ