১৯শে মে, ২০২৫ ইং, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

মালেকের খুটির জোর কোথায়

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর প্রেস ক্লাবের নির্বাহী সদস্য দৈনিক চাঁপাই চিত্র ও দৈনিক উপচার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার সোহানুল হক পারভেজকে মারপিট ও হত্যার চেস্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিন তানোর পৌর এলাকার আকচা গ্রামের বাসিন্দা জামায়াত-শিবির মতাদর্শী হাজী মহির উদ্দীন ও তার পুত্র আব্দুল মালেক তার লোকজন নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় সাংবাদিক পারভেজকে মারপিট করে তার কাছে থেকে নগদ প্রায় দেড় লাখ টাকা, একটি সোনার আংটি মূল্য ৬ হাজার ও একটি আইএমও মডেলের মোবাইল ফোন মূল্য ২৯ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। আর এসব ফেরত চাওয়ায় সাংবাদিক পারভেজকে হত্যার চেস্টা করা হয়েছে বলে পারভেজ অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে তানোর পৌর এলাকার রায়তান আকচ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিক পারভেজ বাদী হয়ে চার জনকে আসামি করে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে থানা পুলিশ তার অভিযোগে গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করে তাকে আদালতের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসি বলেন, আব্দুল মালেক জামায়াত-শিবিরের এক জন সক্রিয় কর্মী ও তার পরিবার জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছে তারা প্রভবাশালী হওয়ায় গ্রামবাসি তার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলতে পারেন না।
প্রসঙ্গগত, তানোরের তালন্দ ইউপির মোহর গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের পুত্র হাফিজুর রহমান রমেলের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ-বিবাদ সুষ্টি হয়। এ ঘটনায় রমেল তার খালাতো ভাই সাংবাদিক পারভেজকে নিয়ে আপোষ-মিমাংসার জন্য আকচা গ্রামে তার শশুর মহির হাজীর বাড়িতে যায়। এ ঘটনায় মহির হাজির পুত্র জামাত শিবিরের ক্যাডার আব্দুল মালেক ক্ষিপ্ত হয়ে রমেল ও পারভেজকে মারপিট করে তাদের কাছে থেকে টাকা, আংটি ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাদের ঘরে আটকে রাখে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক পারভেজ বাদি হয়ে মহির হাজি ও আব্দুল মালেকসহ চারজনকে আসামি করে তানোর থানায় অভিযোগ করেন। কিšত্ত পুলিশ রহস্যজনক কারণে তার অভিযোগ আমলে না নিয়ে কালক্ষেপণ করে উল্টো আসামিদের কোর্টে গিয়ে পারভেজের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেয়। পুলিশের পরামর্শে আব্দুল মালেক বাদি হয়ে সাংবাদিক পারভেজের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা করে। চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক পারভেজ র্জাশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তবে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে সাংবাদিক পারভেজ কারামুক্ত হয় বলে পারভেজের পরিবারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মাালেকের করা মামলায় পারভেজ ও রমেলকে আসামি করা হলেও এখন রুমেলের নাম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র পারভেজের নামে চাজসিট দেয়ার জন্য আব্দুল মালেক তদ্বির করতে ব্যস্ত রয়েছে, এতে মালেকের করা মামলা যে সাজানো ও মিথ্যা সেটিই প্রমাণ করে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। আবার মালেকের করা মামলায় সাংবাদিক পারভেজ কারাভোগ করলেও মালেকের বিরুদ্ধে করা পারভেজের পুলিশ আমলে না নেয়ায় মালেকের খুটির জোর কোথায় সেটি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিপক্ষ মালেকের মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক পারভেজ কারাভোগ করলেও থানায় প্রথমে সাংবাদিক পারভেজের করা অভিযোগ রহস্যজনক কারণে পুলিশ এখানো আমলে নেয়নি, ফলে পুলিশের এমন দ্বিমূখী আচরণে গণমাধ্যম কর্মী ও সচেতন মহলে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে তানোর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, সাংবাদিক পারভেজের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে নিয়ে আপোষ-মিমাংসার কথা বলা হয়েছিল, কিন্ত আব্দুল মালেক আপোষ-মিমাংসার কথা বলে গোপণে কোর্টে পারভেজের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তিনি বলেন, আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে সাংবাদিক পারভেজের করা অভিযোগ আমলে নেয়া না নেয়া এটা ওসি স্যারের বিষয়।
অপরদিকে সাংবাদিক পারভেজের ওপর করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সাংবাদিক সমাজ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোটার সোসাইটি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, রাজশাহী প্রেসক্লাব, তানোর প্রেসক্লাব, মোহনপুর প্রেসক্লাব গোদাগাড়ী প্রেসক্লাব এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এই মিথ্যা মামলার তিব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে মিথ্যা মামলার বাদী জামাত শিবিরের ক্যাডার আব্দুল মালেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। এব্যাপারে জানতে চাইলে আব্দুল মালেক তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাংবাদি পারভেজ তাকে হাতুড়ি দিয়ে মারপিট করেছে তাই তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ