সর্বশেষ সংবাদ
মাদারল্যান্ড নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার আদালতে দায়ের করা মামলায় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর জেনোসাইড (গণহত্যা) ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে জোরালো সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গা সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকের (ব্রুক) সভাপতি মং তুন খিন ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ নীতির আওতায় গত ১৪ নভেম্বর বুয়েনস এইরেসে ফেডারেল আদালতে ফৌজদারি মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলার আবেদনপত্রে মিয়ানমারের বর্তমান সরকার ব্যবস্থায় অং সান সু চির ভূমিকা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সু চির স্টেট কাউন্সেলর পদটি অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের হলেও মিয়ানমারের ব্যবস্থায় কার্যত তা প্রেসিডেন্টেরও ওপর। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে নির্বাচনের প্রাক্কালে এক সংবাদ সম্মেলনে সু চিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না। সু চি জবাব দিয়েছিলেন, ‘কে বলল আমি প্রধানমন্ত্রী হব? প্রধানমন্ত্রী পদটি প্রেসিডেন্টের নিচে। আমি বলছি, আমি প্রেসিডেন্টের চেয়েও ওপরের কোনো পদ নেব।’
ব্রুক সভাপতি মং তুন খিন আর্জেন্টিনার আদালতে করা আবেদনে সু চির সেই প্রেস কনফারেন্সের ইউটিউব ভিডিও লিংক তুলে ধরেছেন। আবেদনে তিনি বলেন, সু চি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট না হলেও কার্যত রাষ্ট্রীয় সব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানকে যৌক্তিক হিসেবে উল্লেখ করতে গিয়ে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট একে ‘নেতৃত্বের’ সিদ্ধান্ত বলেছিলেন। আর এই প্রকৃত রাজনৈতিক নেতৃত্বের কেন্দ্রে আছেন সু চি।
আর্জেন্টিনার আদালতে আবেদনে জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন সত্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনের বিভিন্ন অংশ উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানেও স্পষ্ট বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যে ঘটনাগুলো (রোহিঙ্গা নিপীড়ন) ঠেকাতে সরকারপ্রধান হিসেবে সু চি তাঁর ক্ষমতা প্রয়োগ করেননি। এমনকি তিনি বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেননি এবং তাদের ওপর নিপীড়নের নিন্দাও জানাননি।
আবেদনে উল্লেখ আছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের চূড়ান্ত পর্ব শুরু হয় ২০১২ সালে দেশটিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরুর পর। সু চি নির্বাচিত হওয়ার পর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা বিশেষ গতি লাভ করে।
মামলার আবেদনে আরো উল্লেখ রয়েছে—ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের নৃতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় সমীকরণ পাল্টে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্রসহ অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচার করা হয়েছে, মিয়ানমারের মাত্র ৪.৩ শতাংশ মুসলমান জনগোষ্ঠী দেশ দখল করে নেবে ও মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮৮ শতাংশ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে ইসলাম ধর্মের অনুসারীতে পরিণত করবে।
তুন খিনের আবেদনে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর (তাতমাদাও) সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং, উপসর্বাধিনায়ক ভাইস সিনিয়র জেনারেল সো উইন, স্পেশাল অপারেশনস ব্যুরো-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল অং কিয়াও জাও, পশ্চিমাঞ্চল সামরিক কমান্ডের অধিনায়ক মেজর জেনারেল মং সোয়ে, ৩৩তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং এবং ৯৯তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থান ওর বিরুদ্ধে।
মামলায় আরো বলা হয়েছে, বেসামরিক কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা ছাড়া এত বড় নিপীড়নের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অসম্ভব। রোহিঙ্গাদের হত্যা করতে মিয়ানমারের পিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি দলের সভাপতি নায় মাইও ওয়াইর আহ্বান এবং বিতর্কিত ধর্মগুরু আশিন ওয়েরাথুর রোহিঙ্গাবিরোধী ভূমিকা রয়েছে। রোহিঙ্গা নির্মূলে মিয়ানমার বাহিনীর অভিযানে ৪৫টি কম্পানি ও সংস্থার অর্থ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিও মামলায় তুলে ধরা হয়েছে।
আর্জেন্টিনার আদালতে মামলা করার কারণ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্য নিবাসী তুন খিন তাঁর আবেদনে বলেন, আর্জেন্টিনার ফেডারেল আদালতে ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ প্রয়োগ করার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নজির রয়েছে। স্পেনে ‘ফ্র্যাংকোইজমের’ সময় অপরাধের শিকার
হওয়া ব্যক্তিরা ২০১০ সালে আর্জেন্টিনার আদালতে মামলা করলে তা গৃহীত হয় এবং এখনো তা চলছে। একইভাবে আর্জেন্টিনার আদালত ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ প্রয়োগ করে চীনের ফালুন গং নৃগোষ্ঠীর ওপর জেনোসাইড ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০০৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর লুও গান ও জিয়াং জেমিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গাজা উপত্যকায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনায় মামলা হয়েছে। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ইয়েমেনে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধেও আর্জেন্টিনায় মামলা হয়েছে। জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন সত্যানুসন্ধানী দল জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে মিয়ানমারের অপরাধ তদন্ত ও বিচারের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মাহবুব আলম জুয়েল
(প্রতিনিধি, এশিয়ান টেলিভিশন)
সহ- প্রকাশক: এমদাদুল হক মন্ডল
সহ- সম্পাদক: আশরাফুল ইসলাম রনজু
নির্বাহী সম্পাদক: সাহিন সরকার রনজু
সহ বার্তা সম্পাদক: হাফিজুর রহমান কিয়াস
উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যবৃন্দ :
(১) অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম (২) প্রভাষক রাকিবুল সরকার পাপুল (৩) প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমেদ (৪) ডাক্তার মিজানুর রহমান (৫) সহকারি শিক্ষক আব্দুল বারী
আইন উপদেষ্টা: এ্যাডভোকেট রায়হান কবির (সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর, রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালত)
-: যোগাযোগ :-
তানোর অফিস: রাফি কম্পিউটার্স, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে, মুন্ডুমালা রোড, তানোর, রাজশাহী।
রাজশাহী অফিস: মা কম্পিউটার, লোকনাথ স্কুল মার্কেট, হেতেমখাঁ, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।
ফোন: ০১৭১১-২৭০৪৩৩, ০১৫১৭-০৬৩১১৭
Email: mnewsbd24.2018@gmail.com
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া সকল ধরনের সংবাদ সারা বিশ্বে প্রচারে আমাদের তথ্য দিন।
আপনার প্রতিষ্ঠানটি সারা বিশ্বে পরিচিত করতে বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।